অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য প্রেমের কবিতা
মনে
থাকে যেন, রাজি হয়েছিস তুই ,হাত ধরে নিয়ে যাবি নরকের খাদে
রাবণের
, কর্ণের, ভীষ্মের, দুর্যোধনের আর আমার জ্যান্ত করোটি
হাজার
বছর ধরে পুড়ছে অক্ষরে, বাক্যে, ব্যকরণে, বিদ্যার ঘৃণায়
মনে থাকে যেন, শর্ত দিয়েছিস, আমার সবকটা কালোচুল বেছে দিবি
মনে থাকে যেন, শর্ত দিয়েছিস, আমার সবকটা কালোচুল বেছে দিবি
তিন-বুকের
আধা-বিদেশিনি ,দুইটি বাঙালি বুক, একটি রেডিন্ডিয়ান
সফেদ
বৃন্তদুটো পুরুষের নামে কেন ? প্ল্যাটো ও সক্রেটিস ? বল অ্যানা,
অ্যানা
দি র্যাভেন কাক, ঠোঁটে রক্ত--উসিমুসি বুক ! তৃতীয় কি টেকুমেশ চিফ ?
যিনি বলেছেন : কোয়াও-বোচি-ওয়েআউ-কি ( এই সুন্দর পৃথিবী )
যিনি বলেছেন : কোয়াও-বোচি-ওয়েআউ-কি ( এই সুন্দর পৃথিবী )
বুৎ-ওয়া-তে
ওয়া ( হায় ), ওয়াও-কোয়ন-অগ ( স্বর্গ )
সবকিছু
নষ্ট করে দিচ্ছে এই শাদালোকগুলো
ওদের
জীবনে কোনো প্রেম নেই, শুধু হিংসা, হত্যা, লোভ
অ্যানা,
হাত ধরে নিয়ে চল রেডিণ্ডিয়ান প্রেমিকের
তাঁবুর সুগন্ধে, মনে থাকে যেন, রাজি হয়েছিস তুই, উসিমুসি বুক--
তাঁবুর সুগন্ধে, মনে থাকে যেন, রাজি হয়েছিস তুই, উসিমুসি বুক--
সবকটা
কালোচুল বেছে দিবি, কোলে মাথা নিয়ে, অ্যানা, অনামিকা
আবার
তোর সঙ্গে কবে দেখা হবে, ক্যামেরা মুখের কাছে এনে
তোর
হাঁ-মুখের দেখাবি চটুল বিশ্বরূপ ! অ্যানা দি র্যাভেন ?
বদনাম
হবার জন্য তৈরি হ, চল তোকে কুখ্যাত কুসঙ্গে নিয়ে যাই
তোর স্বর্গে ছেটাই খানিক এই প্রেমিকের নারকীয় করোটির ছাই
সোনালী মিত্রের জন্য প্রেমের কবিতা
পুরাণের
সংস্কৃত পাতা থেকে নেমে এসে তুইই শিখিয়েছিলিস
কবির-লেখকের
গণ্ডারের চামড়া খুলে রাস্তার ভিড়েতে মিশে যেতে
তার
আগে নিজেকে বড়ো উন্নাসিক ভেবে কাদার সুপারম্যান
হাতঘড়ির
কলকব্জায় ঝড়েতে মেটাফরগুলো চালুনিতে চেলে
ভেবেছি পিস্তল পাশে নেই বলে আত্মহত্যা করিনি এখনও
ভেবেছি পিস্তল পাশে নেই বলে আত্মহত্যা করিনি এখনও
দিল্লির
নিম্নচাপে চোখ এঁকে ফিরিয়েছিলিস শব্দ-ভিজুয়াল
তরোয়ালে
আইনি ঝলকে লিপ্সটিকে ছাপা অটোগ্রাফ
প্রতিটি
বিপ্লবের দাম হয় বদলের বাজারও তো বসে
জুলিয়াস
সিজারের গম্ভীর শেক্ষপিয়ারি সাহিত্যের গমগমা ছেড়ে
সাধারণ
মানুষের মতো প্রেমিক-চাউনি মেলি তোর কথা মেনে
বুড়ো
বলে সক্রেটিস সাজবার সত্যই দরকার ছিল নাকি
গ্রিসের
গাধার ওপরে বসে আথেন্স বা কলকাতার পচাগ্যাঞ্জামে
ধুতি
পরে ? কাঁধে উত্তরীয় ! সাহিত্য সভায় ? নাকের বক্তিমে ঝেড়ে !
ভুলে
যায় লোকে । মজার এ মরে যাওয়া । গন ফট । খাল্লাস ।
সোনালী
প্রেমিকা ! তুইই বুঝিয়েছিলিস : হুদোহুদো বই লিখে
বিদ্বানের
নাকফোলা সাজপোশাক খুলে ফেলে দেখাও তো দিকি
কালো জিভ কালো শ্লেষ্মা কালো বীর্য কালো হাততালি
উলঙ্গ নাচো দেখি তাণ্ডবের আঙ্গিকবর্জিত তালে-তালে
কালো জিভ কালো শ্লেষ্মা কালো বীর্য কালো হাততালি
উলঙ্গ নাচো দেখি তাণ্ডবের আঙ্গিকবর্জিত তালে-তালে
চুমুর
পুনঃচুমু পুনঃপুনঃচুমু দিল্লির নিম্নচাপ মেঘে
এ-দ্যাখ
গণ্ডারের শিব-সত্য-সুন্দরের চামড়া ফেলে দিয়ে
আজকে
পেয়েছি নখে প্রেমিকার চুলের জীবাশ্ম
কৃতি ঘোষ-এর জন্য প্রেমের কবিতা
এই
সেই গালফোলা যুবতী, যাকে তার বাবা ডাকে ডাবলিউ
রোদের
সঙ্গে ষড় করে যে, আমার ছায়াকে ভাঙেচোরে সে
সিগ্রেট
ফোঁকে বলে চুমু ওর, খাওয়া এক বাসি কার্ড এটিএম
পিন
ওর দুই চোখে মিচকায়, ইস্তিরি করা মোর ভজনা
আমি
ছিনু সতেরোশো শতকে, ও রয়েছে বাইশের কোঠাতে
যা
নিয়েছি ফেরত দেয়া যাবে না, উকুনের মতো চুলে পুষেছি
মৎস্যবালিকা
যার বুকে আঁশ, ও আমার পিন-আপ পোস্টার
নদী
ওর ঘাম ছাড়া বয় না, প্রেমিকেরা কারাগারে বন্ধ
ফোলাগাল
ছুঁই ফেসবুকে রোজ, চুমু খাই সিগ্রেটি ঠোঁটে ওর
আমার
কান দুটো কুমিরের, গিটার বাজিয়ে ডাকে আয় আয়
ও
আমায় নিলামেতে কিনেছে, এক টাকা পঁয়ত্রিশ পয়সায়
চেন বেঁধে পথেঘাটে নিয়ে ঘোরে, তবু বলে তুতুতুতু আয় আয়
তুতুতুতু আয় আয়, তুতুতুতু আয় আয় আয় আয়
তুতুতুতু আয় আয়, তুতুতুতু আয় আয় আয় আয়
উপমা অগাস্টিন খেয়ার জন্য প্রেমের কবিতা
আমাদের
দুজনের মাঝে একটা চুলের কাঁটাতারের সীমান্ত
একটা
চুলের কাঁটাতারের ওদিকে তিরিশ মিনিট আগে শুকতারা ওঠে
উপমাকে
পেতে আমার সারা জীবন লেগে গেল জানি পাবো না
পুরুষদের
কাটা মাথার আবর্জনায় আমার মাথা তুই চিনতে পারিসনি
কবিতারা
কেন যে উপমাকে বাদ দিতে গিয়ে শকুন কলোনিতে ঢোকে
আকাশে
পাক ধরেছে দেখতে পায় না
প্রেমের
ময়াল প্যাঁচ, ভালোবাসা আমার পেশা
আগুনে
পোড়ানো ছায়া পাঠিয়ে দেবো চুলের কাঁটাতারের ওই পারে
ঝিঝিঁপোকাদের
কোরাস ভেবে তুই এড়িয়ে যাবি
অথচ
আমিই তো সেইন্ট অগাস্টিন, ভালোবাসা আমার পেশা
মগজের
ভেতরে তোর কন্ঠস্বর দিয়ে ফাঁদপাতা মাকড়সার জাল
বর্ষার
ফোঁসফোঁসানি মেশানো তোর হাঁ-মুখের ইলশেগুঁড়ি
ঘুমোতে-ঘুমোতে
একরাতে নিজের চামড়ে খুলে পৌঁছে যাবো
দেখবো
খেয়ার ঠোঁট বিদেশ চোখ বিদেশ থুতনি বিদেশ চুল বিদেশ
গোলাপি
পূর্ণিমার বিছানায় জন্মেছিলিস
তোর
আব্বু আমায় আফ্রিকার মানুষ মনে করেছিলেন
কেননা
তোর দিকে চাইলেই আমার দুই কাঁধ নেচে ওঠে
অথচ আমি সেইন্ট অগাস্টিন, ভালোবাসা আমার পেশা
তানিয়া চক্রবর্তীর জন্য প্রেমের কবিতা
কী
নেই তোর ? মরুভূমির ওপর আকাশে পাখিদের তরল জ্যামিতি
প্রতিবাদ -- বিপদের ঝুঁকি -- সম্ভাব্যতা-বিরোধ -- সমাক্ষরেখা --
প্রতিবাদ -- বিপদের ঝুঁকি -- সম্ভাব্যতা-বিরোধ -- সমাক্ষরেখা --
আমি তো লাল-ল্যাঙোট সাধু, আমি বাস্তব তুই বাস্তবিকা
কুলু-মানালির
পাইন থেকে ঝরাচ্ছিলিস সবুজ ছুঁচের গোছা
ক্ষান্তি -- পূর্বপক্ষ -- ধাঁধা -- গূঢ়-গুণ -- শিল্পবর্ম -- মেজাজ -- সন্দেহ --
আমি তো ছায়াফোঁকা সাধু, তুই যতোদিন আছিস, মরব না
এক
মিনিট দাঁড়া, "কোনো কিছু প্রিয় নয়", মানে ?
জানি রে জানি, অঙ্কুরের বোধ তার বীজে, অয়ি স্পন্দনসমঙ্গ
আমি তো সীমাভাঙুনে সাধু, তোর রহস্য দখল করে দাম চুকিয়েছি
চাপাতি
দিয়ে কেটে যেসব মেঘ নামিয়েছিলিস, অক্ষরগুলোর শ্বাস
বানান ভুলে যায়, ফি-সেকেণ্ডে নাড়ি-ঘাতের হার বাড়িয়ে দিস
আমি তো বুনো-প্রেমিক সাধু, আমার প্রেম বদনাম করবে তোকে
প্রাণচঞ্চল
বাদামি পাথরের কাঁপুনি, অনুরণন, অয়ি প্ররোচনাময়ী
অ্যানার্কি -- হাই ভোল্টেজ উল্কি -- ক্রিয়া না বিশেষ্য বুঝতে পারি না--
আমি তো মাটিতে পোঁতা সাধু, তুই খুঁড়ে তুলবি বিপদে পড়বি
আমি
ভাটিয়ালি গেয়ে বেড়াই , নৌকোর দাঁড় বাইনি কখনও
আসলে গান তো নৌকোর, দাঁড়ের, নদীর স্রোতের, ভাটার টানের
আমি যে তোকেচাই মার্কা সাধু, বাক্যদের উত্তেজিত কোন ম্যাজিকে করিস
এক
মিনিট দাঁড়া, "কাউকে ভালোবাসিনি আমি", মানে ?
অয়ি ফাঁদগর্ভা, যখন কাঁটাগাছের দিকে জিরাফের জিভ নিয়ে যাস
আমি তো ভাঙাগড়ার সাধু, পথ গুটিয়ে পাথর করে দিস
পৃথিবী
থেকে ছবি খুঁটে-খুঁটে নিজের ব্র্যাণ্ডের ছাপছোপ দিস
টের পাই কালো বিশ্ববীক্ষায় আমার নামের স্হায়ীত্ব নেই
আমি তো সাধু-প্রেমিক তোর, পৃথিবীর নাম দিসনি কেন
অয়ি
শব্দমোহিনী, না পড়েই উল্টে যাচ্ছি পাতার পর পাতা
অস্হির কৌতূহলে এই কবিতাটা এগোচ্ছে আর তোকে শুনতে পাচ্ছে
আমি তো বাকমোহন সাধু, লিখিসনি তো প্রেম কেন ভিজে এবং গরম
আসলে
জীবন নষ্ট করার কায়দা সকলে জানে না
ঘুম থেকে উঠে হাই তুলিস আর তোর গোলাপি আলজিভ দেখি
আমি তো খুনির খুনি সাধু, যথেচ্ছ খরচ করিস শব্দ-রজঃ-টাকা
ম্যাডক্স
স্কোয়ারের কুঁজো পুরুতের ঢঙে দুর্গার আরতি করি
তোর ইঙ্গুজের বেদনা যন্ত্রণা ব্যথা কষ্ট প্যানিক দিয়ে
আমি তো হাজারঠ্যাং সাধু, গাছেদের ঝোড়ো চিৎকার
এক
মিনিট দাঁড়া, "ব্যথা ছাড়া জীবনে আরকিছু নেই", মানে ?
তোর কথার হাঁফ-আকূলতা আমার হৃদরোগের কারণ
আমি তো ২৪x৭ সাধু, ফলো করি ফলো করি ফলো করি
মৃত্যু
মানেই তো প্রতিশোধ মানুষের হোক বা প্রেমের
দেখেছিস তো, যতো রাগি ঘুর্ণিঝড় ততো সে দেশদ্রোহী
আমি তো ল্যাঙোটহীন সাধু, দেখি অনুভবকে আঙ্গিক দিচ্ছিস
সঙ্গীত
যেভাবে গানকে বিষাক্ত করে, আমার কপালে খুনির বলিরেখা
ইটারনাল ব্লিস, রেড ওয়াইনে চোবানো তোর ছবির ঝুরো
Apnii paren! Selam!
ReplyDeleteএভাবে লিখতে, এভাবে প্রেমকাব্য লিখে কবিপ্রেমিকের ভেতরের ছায়াচিত্র আঁকতে আপনিই পারেন মলয়দা। স্যালুট।
ReplyDeleteপ্রেমের'ই কবিতা। কিন্তু কত বিচিত্রিতা। অনুভবের অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়।
ReplyDeleteSobkotii sundor.Kheya r ta beshi tanlo.Apurbo personified Kobita.
ReplyDeleteওরাতোবর্তেগেলোপুরো
ReplyDeleteওনারা ? না আমি !
Deleteদারুণ সব লেখা।
ReplyDeleteএরই নাম হল মলয় রায়চৌধুরি brand. ভাল থাকুন।
ReplyDeleteদাদা, হিংসে হচ্ছে ! আমাকে নিয়েও লিখুন
ReplyDeleteগ্রেট !
ReplyDeleteএই নাও একটুকু ঈর্ষা। মলয়দা।
ReplyDeleteI just loved it. I wonder how long it took you to complete this. Thank you for sharing.
ReplyDelete